তুরস্ক সম্প্রতি বহুল ব্যবহৃত মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম ডিসকর্ড নিষিদ্ধ করেছে, যা দেশটির ডিজিটাল নীতি এবং যুবসমাজের সুরক্ষার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ডিসকর্ড একটি জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন, যা গেমারদের মধ্যে বেশ প্রচলিত।
এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তটি আঙ্কারার একটি আদালত থেকে আসে, যেখানে অভিযোগ করা হয় যে প্ল্যাটফর্মটি শিশু শোষণ এবং অশ্লীলতা সংক্রান্ত বিষয়বস্তু প্রচারের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। তুরস্কের বিচার মন্ত্রী ইয়িলমাজ তুনচ (Yılmaz Tunç) এই নিষেধাজ্ঞাকে যৌক্তিকতা প্রদান করেছেন, বলেছেন যে এই পদক্ষেপটি মূলত যুবসমাজকে অনলাইনে ক্ষতিকর বিষয়বস্তুর প্রভাব থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।
তুরস্ক সরকার দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর নজরদারি করছে এবং তাদের নিয়ন্ত্রণ জোরদার করছে। বিশেষ করে, তারা মনে করছে যে এই ধরনের প্ল্যাটফর্মগুলো প্রায়ই রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম এবং সামাজিক উত্তেজনা তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত হয়। সরকারের দাবি, তারা চায় না যে এই ধরনের যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে মানুষ গণবিক্ষোভ সংগঠিত করুক বা রাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বার্তা প্রচার করুক।
এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে আরেকটি কারণ হলো, ডিসকর্ডের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো শিশুদের জন্য নিরাপদ নয় এবং এতে বিপজ্জনক বিষয়বস্তু ছড়ানো হতে পারে। এ ধরনের অভিযোগ শুধু তুরস্কেই নয়, বিভিন্ন দেশেও উঠেছে। যদিও তুরস্কের এই পদক্ষেপ সমালোচনার মুখে পড়েছে এবং অনেকেই এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাত হিসেবে দেখছেন, সরকার দাবি করছে যে এটি অনলাইন অপরাধ প্রতিরোধ এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য জরুরি ছিল।
তুরস্কের এই সিদ্ধান্তটি রাশিয়ার আগের পদক্ষেপের সঙ্গে মিল রয়েছে। রাশিয়াও কিছুদিন আগে ডিসকর্ড নিষিদ্ধ করেছিল, কারণ প্ল্যাটফর্মটি সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম এবং উগ্রবাদী প্রচারপত্র ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত ছিল।
উভয় দেশের ব্যবহারকারীরা নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর জন্য ভিপিএন (VPN) ব্যবহার করে এই ধরনের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের চেষ্টা করছে, যদিও সরকার ভিপিএন সেবাগুলোও সীমিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
এ ধরনের নিষেধাজ্ঞাগুলো ডিজিটাল যোগাযোগের স্বাধীনতার ওপর আঘাত হিসেবে দেখা হলেও, সরকারগুলোর দাবি, তারা মূলত যুবসমাজের সুরক্ষা এবং অবৈধ কার্যকলাপ রোধের জন্য এই পদক্ষেপ নিচ্ছে।
তথ্যসূত্র: Benzinga, RestorePrivacy, DW, Reuters, Turkiyetoday